DEHLIJ

অমলেন্দু চক্রবর্তী

দীপঙ্কর ও তার পোস্টমডর্ন কবিতা

 অমলেন্দু চক্রবর্তী 




 জিরো আওয়ার দিল্লি হাটার্স।

কলকাতা আন্তর্জাতিক ব‌ইমেলায়।এই দুটি পত্রিকা একটি  দীপঙ্কর দত্ত অন্যটি দীলিপ ফৌজদার সময়টি নব্বয়ের‌ দশকের। 'দিল্লি হাটার্স' বরং খানিক পরেই বেরোন শুরু হয় বলতে গেলে। আবার এগুলির চেয়েও 'উন্মুক্ত উচ্ছাস' আরোও আগে সময়টির কথা বলছিলাম। কম্পেয়ার নয়। সবগুলোই তার নিজস্বতার ধ্বজা বহন করে। তবুও অনেকে অনেক বার বলা কথাটি আজ আমিও আরেকবার বলতে বাধ্য হচ্ছি। বাংলা সাহিত্য সমৃদ্ধ হয়ে আসছে বাংলার মূল ভুখন্ডের বাইরে থেকে। তবে তা গিনচুনা সাহিত্যিকদের হাত ধরে। রচকের ছড়াছড়ি তা বলে সব লেখা পাতে দেওয়ার মতো নয়। আজোও তাই, দীপঙ্কর এর চলে যাওয়া ঢের'দিন হলো। আড্ডা ব‌ইমেলার মাঠে থোকেবোকে 'চলো অমল ঐ দিকটায় বসি। ব্যাশ এই কয়েকটি দিন। বোঝো সেখানে কেবল রবীন্দ্র গুহ অরুপ চৌধুরী গৌতম দাসগুপ্ত দীলিপ ফৌজদার।

                                            এখানে এসে তোমাদের সঙ্গে দেখা হয়, কথা হয়। এই তুমি বারীন ঘোষাল  কমল চক্রবর্তী স্বপন রায় রঞ্জন মৈত্র অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়। হৈ হৈ করে নতুন উর্জা ভরে যায় প্রাণে।' শুরুর দিকটাই এদের লেখা গুলির যাঁরা অধ্যায়নে আরাম বোধ করেননি। তাঁদের তীক্ষ্ণ ফলার মতো বাকতল্লাও হজম করতে হয়। 

এখানে দীপঙ্করের একটি কবিতা এখানে তুলে ধরছি। "মূককীট" / ঢেউরা ঢুলছে নিভু ফিলিপিনো হ্যারিকেন ছায়ায় / আর চুরাশি লক্ষ কিউরেরি তিরে ছন্নি ছন্নি সোহাগচাঁদ ফিনকি এসে পড়েছে ভ্রমণে হাম্পটির এক হি থালি কে যারা হমদর্দ চট্টে বট্টে, / গ্রেট ফলের আগেই অল্টোফোবিয়ায় ফেটে যায় তাদের ধোঁয়াশলা শেল স্ক্রিপ্ট আধখাওয়া নিষিদ্ধ টেরিডোফাইটা/ বিষিয়ে তুলছে পিরানহাঁয়ের ম্যাডাম ডব্লিউর রুট ক্যানেল / অথচ কপাটি খুলছে না,/ শাবল চাড়ে পিউপায়ে পায়ে দংষ্ট্রার লার্ভারা উড়াল দিচ্ছে প্রিমাভেরা ঋতুদের দিকে / অতঃপর হামিং কোমাটোজ অতঃপর প্রশান্তির পেন্টোবার্বিটাল / রেপ বলবেন না, ভার্টিক্যাল স্মাইল নয় স্যার, ইটোয়াজ আ্যনাল, আ্যনাল ---

  (শহর/৩৯) অজিত রায় সম্পাদিত। অন্য আরেকটি কবিতা।(শহর/৪০)

" শকট "

ফ্লুওরেসেন্ট খানি সাদা তিন ভাগ ঠুল্লা বাইরে এক পাট দরজা ভেজিয়ে বিন্দুবাসিনী মুদ্রাযন্ত্র /প্রুফ শিট বিছিয়ে কালুয়া ঠাপাচ্ছে একশো পঁয়ত্রিশ খুল্লার অন্ধা চাষাবাদ। / লেমনগ্রাসগুলি শেভ করার পর যমীর কবোত্তল বনানী এখন অনেকটাই লেহনার্হ / মেথি পরোটার দশটি ছিদ্র ডায়াল করিয়া/ কভারেজ এরিয়ার বাইরে এক নিরালম্ব সূর্য ও সঞ্জনা ল‌ইয়া কি করিবে যম ? / ঘোড়া কেনার পর যে,ছোট ছোট বকুপুরগুলির তবাহি তয় হয় মঞ্জিল / ড্রেসারা সেখানে কোন ধ্বনি নয়, জিভ ছেঁড়া কাঠিয়াওয়ারিদের তাহারুর্ষকলীন গ্যাঁজলা / ফলে দ্বাদশ আদিত্য নিভে গেলে অদিতি যখন নিশ্ছিদ্র / মথ সদৃশ যোনিটি আলো দেয় আর কালদণ্ডের কৈশিকায় নিঙাড় রক্ত ফিরে আসে--- / নিলিং হুইলব্যারোতে কালুয়া এখন ঘর্মাক্ত / আলোঅন্ধ দুই শকটচক্র খুলে ভেঙে পড়ে মুদ্রাযন্ত্র ---- 

ফলে দীপঙ্কর দত্ত এর পোস্টমর্ডান কবিতা র শুরুয়াতি তোড়ফোড় গঙ্গাজলি রা মেনে নিতে পারেন নি। এবং সেইটিই স্বাভাবিক ।

                                                     দীপঙ্করে র সাথে সেই শেষ কথাবার্তা তবে। "আগ্নেও বসন্তের জানলার" কাউন্টার ব্লো, ব্রেক টু গেন আ্যকসেস, গুলি পড়া হয়নি। পড়ার সুযোগ ঘটেছে। পোস্টমডার্ন ব্রূহাহা,জিরো আওয়ার পাওয়ার পোয়েট্রি, আর শেষ লেখাটিও 'ব্রেইলবর্ণ বিষহরি'। শেষ কাব্যগ্রন্থ বোধহয় দেখে যেতে পারেনি। অসময়ে চলে যাওয়াই। আধুনিক  বাংলা সাহিত্যে,চরম ক্ষতি হয়েছিল সেদিন। এই ভাবে। আমরা অসময়ে অজিত রায় সুকুমার চৌধুরীকে ও হারালাম। বেশির ভাগই আশির দশক নব্বয়ের দশকের  কবি গদ্যকার নাবিক হীন ট্রলার। বললে ভুল বলা হয়না। সবশেষে পীযূষ দাকে আমার সহস্র প্রণাম এইরকম একটি উদ্যোগ নেওয়ার জন্য।

No comments

FACEBOOK COMMENT